Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

পুষ্টিমান অক্ষুণ্ন রেখে অসময়ে শাকসবজি সংরক্ষণ

শাকসবজি সঠিকভাবে সংগ্রহ ও সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা
বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। তাই অধিক জনসংখ্যার পুষ্টি চাহিদা মিটানোর জন্য সারা বছরই আমাদের শাকসবজি চাষ ও সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। ডিএই, হর্টিকালচার উইংয়ের তথ্য অনুযায়ী ২০১৭-১৮ সালে বাংলাদেশে মোট সবজি (আলুসহ) উৎপাদিত হয়েছে ২,৬২,৩০,৯২৭ মেট্রিক টন এবং চাহিদা রয়েছে ১,৪৬,০০০০০ মেট্রিক টন অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় ১,১৬,৩০৯২৭ মেট্রিক টন অতিরিক্ত সবজি উৎপাদিত হয়েছে। এফএও এর ২০১৬-১৭ প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রাপ্ত বয়স্ক একজন মানুষের প্রতিদিন গড়ে ২৫০ গ্রাম শাকসবজি (আলুসহ) খাওয়া দরকার কিন্তু বর্তমানে এই দেশের মানুষ গ্রহণ করছে মাত্র ১২৫ গ্রাম। এই বিশাল ব্যবধানকে কমিয়ে আনার জন্য শাকসবজি উৎপাদনের মৌসুম বা সময় দীর্ঘ করতে হবে বা বাড়াতে হবে ও আমাদের খাদ্যাভাস পরিবর্তন করতে হবে। রবি মৌসুমে সবচেয়ে বেশি শাকসবজি উৎপাদিত হয়ে থাকে যা আমাদের চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি। কিন্তু মৌসুমে বাজারমূল্য খুব কম হওয়ায় ও অধিকাংশ শাকসবজি দ্রুত পচনশীল হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। অন্য দিকে দ্রুত পচনশীল বলে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায় না এবং প্রচুর অপচয় হয়ে থাকে। তাই পুষ্টিমান অক্ষুন্ন রেখে অসময়ে শাকসবজি সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে আমরা শাকসবজির অপচয় রোধ ও আমাদের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে পারি। তবেই আমরা আমাদের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারব। তাছাড়া বিভিন্ন কারণে উৎপাদিত পণ্যের গুণগতমান নষ্ট হয়। নিয়ম অনুযায়ী ফসল সংগ্রহ ও স্থানান্তর না করলে পণ্যের মান ও বাজারমূল্য কমে যায়। পণ্য ঘষা খেলে বা ক্ষত হলে বা থেঁতলে গেলে বাদামি ও কাল দাগ হয়ে উজ্জ্বলতা হারায়। ক্ষত হলে বিনষ্টকারী জীবাণু অনুপ্রবেশের সুবিধা হয়, যা পণ্যকে পচাতে ত্বরান্বিত করে। এসব কারণে পণ্যের শ্বসনের হার বেশি বেড়ে যায় এবং সংরক্ষণের সময়কাল কমে যায়। শাকসবজি সংগ্রহকালে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে সবজিতে আঘাত না লাগে। কারণ আঘাতপ্রাপ্ত শাকসবজিতে শ্বসন ও প্রস্বেদন ক্রিয়া বেড়ে যায়, ইথিলিন বেশি উৎপন্ন হয় ফলে সবজির ওজন কমে যায়, সাথে সাথে রোগজীবাণু দ্বারা আক্রান্ত  হয় এবং গুণগতমান  হ্রাস পায়।

 

শাকসবজি সংরক্ষণের পদ্ধতি  
পচনশীল বলে অধিকাংশ শাকসবজি আমরা মাঠ থেকে সংগ্রহ করার সাথে সাথে কিংবা কয়েক দিনের ভেতরে খেয়ে ফেলি। সময় মতো না খেলে এগুলো পচে নষ্ট হয়। তাই মৌসুমে উৎপাদিত শাকসবজি দেরিতে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে দ্রুত পচনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য আমরা সংরক্ষণ কৌশল অবলম্বন করতে পারি। উদ্ভিদের (পাতা, ফুল, ফল) বিপাক প্রক্রিয়াগুলো বিভিন্ন জারক দ্রব্যের নিয়ন্ত্রণাধীন। তাই কোনো প্রকারে জারক দ্রব্যের এবং জীবাণুর কার্যকারিতা নষ্ট করে দিতে পারলেই পচনশীল দ্রব্য দ্রুত পচনের হাত থেকে রক্ষা পায়। এজন্য আমরা বিভিন্ন সংরক্ষণ পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকি।
শাকসবজি সংরক্ষণ মূলত চার প্রকার। যথা-
 ১) টাটকা অবস্থায় সংরক্ষণ : শাকসবজি সংরক্ষণের জন্য হিমাগারে নিম্ন তাপমাত্রা ও উচ্চআর্দ্রতায় রাখা যায়। এতে সবজির স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিমান প্রায় অপরিবর্তিত থাকে। তবে এটা খুব ব্যয়বহুল ও হিমাগারের সংখ্যাও পর্যাপ্ত নেই। যেমন- টমেটো, আলু, মিষ্টি আলু, গাজর, মটরশুঁটি ইত্যাদি হিমাগারে সংরক্ষণ করা যায়।


২) শুকিয়ে সংরক্ষণ : সতেজ ও রসাল হওয়ার কারণে শাকসবজিতে দ্রুত পচন ধরে। তাই শুকিয়ে শাকসবজিতে পানির পরিমাণ কমিয়ে আনতে পারলে এগুলো সহজে জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয় না ও দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। যেমন- সজিনা পাতা, ধনিয়া পাতা, বিলাতি ধনিয়া, মাশরুম, শিমের বিচি ইত্যাদি ভালোভাবে শুকিয়ে সংরক্ষণ করে অসময়ে চাহিদা মেটানো সম্ভব। পাকা শিমের বিচি ও বরবটির বিচি শুকিয়ে সারা বছর সংরক্ষণ করা যায়। শিমের বিচি ভেজে খাওয়া যায় ও ভেজে গুঁড়া করে ডাল হিসেবেও রান্না করে খাওয়া যায়। পটোলের পাতা দিয়ে বড়া, স্যুপ ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। পটোলের পাতা ঔষধিগুণ সম্পন্ন বিধায় শুকিয়ে গুঁড়া করে সারা বছর সংরক্ষণ করে খাওয়া যায়।


৩) ব্ল্যানচিং পদ্ধতিতে সংরক্ষণ : প্রায় সব সবজি যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজর, মুলা, আলু, মিষ্টিআলু ইত্যাদিকে ছোট করে কেটে ব্ল্যানচিং করে রেখে প্রায় ৩-৫ মাস সংরক্ষণ করা যায়। ব্ল্যানচিং হলো একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে তার মধ্যে কাটা সবজি ৩-৪ মিনিটের জন্য ছেড়ে দিতে হবে। তারপর আধাসিদ্ধ সবজিগুলো ছাঁকনিতে ঢেলে পানি ঝরিয়ে এবং পরে তাতে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ঠাণ্ডা করে সম্পূর্ণ পানি ঝরিয়ে অন্য একটি পাত্রে ঢালতে হবে। সবজিগুলো সম্পূর্ণভাবে ঠাণ্ডা হলে বায়ুরোধক পাত্রে ভরে ডিপফ্রিজে সংরক্ষণ করা যায় অথবা ব্ল্যানচিং করা সবজিগুলো সূর্যের আলোতে শুকিয়ে ও বায়ুরোধক পাত্রে সংরক্ষণ করা যায়।
 

৪) প্রক্রিয়াজাত করে সংরক্ষণ : প্রক্রিয়াজাত করেও শাকসবজি সংরক্ষণের বহু পদ্ধতি প্রচলিত আছে। প্রক্রিয়াজাত করার দরুন শাকসবজির মূল গঠন পরিবর্তিত হয় এবং পচন থেকে রক্ষা করার জন্য কোনো না কোনো মাধ্যম বা রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করতে হয়। শাকসবজি প্রক্রিয়াজাত করে দীর্ঘদিন ঘরে রেখে খাওয়া যায়। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে প্রক্রিয়াজাত করে এটি একটি ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠায় এবং গ্রামীণ দারিদ্র্য বিমোচন তথা আত্মকর্মসংস্থানে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। শাকসবজি প্রক্রিয়াজাতকরণ বা সংরক্ষণের কয়েকটি মাধ্যম সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোকপাত করা হলো।


ক. চিপস : আলু ও কাঁচাকলা ও মাশরুম ইত্যাদি সবজিকে পাতলা স্লা্ইস করে কেটে রোদে শুকিয়ে চিপস তৈরি করা যায়। যা দিয়ে মুখরোচক খাবার তৈরি করে বাচ্চাদের আকৃষ্ট করা যায় এবং সারা বছর এর প্রাপ্তি নিশ্চিত করা সম্ভব।
খ. চিনি ও লবণের দ্রবণে শাকসবজি সংরক্ষণ : ক্যাপসিকাম, মাশরুম, কচি শসা ইত্যাদি চিনি ও লবণের দ্রবণে সংরক্ষণ করা যায়।
গ. রস আকারে সংরক্ষণ : টমেটোর রস তৈরি করে সংরক্ষণ করা যায়।
ঘ. জ্যাম, জেলি : চুকুর, আলু, মিষ্টিআলু, মিষ্টিকুমড়া ইত্যাদির জ্যাম জেলি তৈরি করা যায়।
ঙ. আচার, সস, চাটনি : বেগুন, টমেটো ইত্যাদির আচার, সস, চাটনি করা যায়। অত্যন্ত সুস্বাদু ও পুষ্টিকর বেগুনের আচার করে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। টমেটোর সস সর্বজন স্বীকৃত ও বহুল প্রচলিত, যা অনেক দিন সংরক্ষণ রাখা যায়।
চ. মোরব্বা : চালকুমড়া, পেঁপে ইত্যাদির মোরব্বা করা যায়।
ছ. বিভিন্ন ডাল ও মিষ্টিকুমড়া দিয়ে বড়ি বানিয়ে সংরক্ষণ করা যায়।

 

বিভিন্ন শাকসবজি সংরক্ষণ কৌশল

মিষ্টিকুমড়া : ১০০-১২০ দিনের পাকা মিষ্টিকুমড়া সারা বছর সংরক্ষণ করা যায়। এ ছাড়া ও পাকা মিষ্টিকুমড়া দিয়ে বড়ি তৈরি করে ও ভালোভাবে শুকিয়েও অসময়ের পুষ্টি চাহিদা মেটানোর জন্য সংরক্ষণ করা যায়।
 

চালকুমড়া : এটি রবি ও খরিপ দুমৌসুমেই মাচা, চালা ও ভূমিতে জন্মে। পাকা চালকুমড়া বাড়িতে কয়েক মাস বা দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। চালকুমড়ার বোঁটার কাটা মাথায় মোম লাগিয়ে সংরক্ষণ মেয়াদ আরও বাড়ানো যায়। পাকা চালকুমড়া দিয়ে মোরব্বা তৈরি করে রেখেও অসময়ের জন্য সংরক্ষণ করা যায়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন উপায়ে ও নিরাপদ পানি ব্যবহার করে এসব পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করলে পুষ্টিমান বজায় থাকবে।
 

বাঁধাকপি : সাধারণত হিমায়িত গুদামে ৩ মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। এ ছাড়া শীতকালে সাধারণ তাপমাত্রায় বাতাস চলাচল উপযোগী ছায়াযুক্ত স্থানে প্রায় ৩-৪ সপ্তাহ সংরক্ষণ করা যায়।
 

ফুলকপি : জমি থেকে ফসল তোলার প্রায় ৭ দিন আগে নেপথালিন অ্যাসেটিক এসিড পাতায় ছিটিয়ে পরে ঠাণ্ডা স্থানে রাখলে প্রায় এক থেকে দেড় মাস ফুলকপি ভালো অবস্থায় থাকে।
 

টমেটো : মৌসুমে সংরক্ষণের সময় পাকা টমেটো মেঝেতে খড় বিছিয়ে ঢেকে রাখতে হয়। অনেক সময় খাঁচায় খড় বিছিয়ে টমেটো ঢেকে রাখা যায়। এভাবে স্থানীয় জাতের ক্ষেত্রে ৫-৭ সপ্তাহ ও হাইব্রিড জাতের টমেটোর ক্ষেত্রে ২০ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। এ ছাড়াও টমেটো দিয়ে প্রক্রিয়াজাতকৃত সস, চাটনি করে সারা বছর সংরক্ষণ করা যায়। আর তাজা টমেটো হিমাগারে রেখেও দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। অসময়ে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে ও চাহিদা মেটানো সম্ভব।
 

কুমড়াজাতীয় সবজি : বারোমাসী জাত রোপণ করে অসময়ে বিভিন্ন কুমড়াজাতীয় সবজি পাওয়া যায়।
 

গোলআলু : স্বল্প খরচে কৃষকপর্যায়ে আলু সংরক্ষণের বিভিন্ন কৌশল রয়েছে। বিভিন্ন কৌশলগুলো হলো:
 

আলু তুলনামূলকভাবে ঠাণ্ডা এবং বায়ু চলাচল করে এমন কোনো কক্ষে বা স্থানে রাখা যায়। সংরক্ষিত আলু ১০-১৫ সেন্টিমিটার (৪-৬ ইঞ্চি) উঁচু করে মেঝেতে বিছিয়ে রাখতে হবে। এছাড়া বাঁশের তৈরি মাচায়, ঘরের তাকে বা চৌকির নিচেও আলু বিছিয়ে রাখা যেতে পারে। সংরক্ষিত আলু ১০-১৫ দিন পর পর নিয়মিত পরিদর্শন ও বাছাই করে রোগাক্রান্ত, পোকাক্রান্ত ও পচা আলু আলাদা করে নিতে হবে।

আলু সুপ্তাবস্থায় গুদামজাতকরণ :  ফসল পরিপক্ব হওয়ার সময় থেকে আলুর সুপ্তাবস্থা আরম্ভ হয়। আলুর সুপ্তাবস্থা ফসল পরিপক্ব হওয়ার পর থেকে প্রায় ২-৩ মাস পর্যন্ত থাকে। সচরাচর ব্যবহৃত পাত্রে যেমন- ঝুড়ি বা ডোল ব্যবহার করা যেতে পারে। গুদামজাতকরণ পাত্রের তলদেশ এমনভাবে তৈরি হতে হবে যাতে বাতাস ঢুকতে পারে এবং আলুর স্তূপের ভেতর বায়ু চলাচল করতে পারে। ঘরের মেঝেতে রাখার ক্ষেত্রে আলুর স্তূপ যাতে ১ মিটার (৩ ফুট) গভীর বা ২ মিটারের (৬ ফুট) বেশি প্রশস্ত না হয় এবং যথেষ্ট বায়ু চলাচলের সুযোগ থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। রাতে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থাও করতে হবে। কারণ এ সময় বাতাস সবচেয়ে ঠা-া থাকে এবং আলু হতে অতিরিক্ত তাপ বের হয়ে যায়। সাধারণত উচ্চফলনশীল জাত ২-৩ মাসের বেশি গুদামজাত করার জন্য উপযুক্ত নয়। দেশি জাতের আলুর সুপ্তাবস্থা ৪-৫ মাস পর্যন্ত  থাকে। এসব জাত কৃষকপর্যায়ে বেশি সময় সংরক্ষণ করা সম্ভব এবং কোনো কোনো জাতের আলু প্রায় ৬ মাস পর্যন্ত  সংরক্ষণ করা যায়।
 

বালু দিয়ে ঢেকে রাখা
পরিষ্কার শুকনো বালু দিয়ে আলু ঢেকে ও সংরক্ষণ করা যায়। এক্ষেত্রে আলু-বালু-আলু পর্যায়ক্রমিকভাবে স্তর করে রাখা যায়। এ ব্যবস্থায় টিউবার মথের আক্রমণ হতে আলু রক্ষা পায় এবং অংকুর শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত গুদামে নিরাপদে রাখা যায়। ছোট আকারের বীজ আলুও মাটি দিয়ে তৈরি পাত্রে রেখে ঘরের ঠা-া স্থানে সফলভাবে গুদামজাত করা যায়।

 

বীজ আলুর গুদামজাত
বীজ হিসেবে রাখা আলুর অংকুর গজানো শুরু হলেই আলাদাভাবে গুদামজাত করতে হবে। যেখানে দিনের আলো পড়ে এমন স্থানে তাক বা মেঝের ওপর ২-৩টি স্তরে আলু গুদামজাত করা যায়। দিনের প্রখর আলো গোলআলুর অংকুরকে ১০-১৫ মিলিমিটারের বেশি দীর্ঘ হতে বাধা দেয়। অংকুর ছোট থাকলে বীজ আলু আরও কিছুদিন নিরাপদ রাখা ও গুদামজাত করা যায়।

 

অহিমায়িত অবস্থায় খাবার আলু সংরক্ষণ
আমাদের দেশে অহিমায়িত অবস্থায় সাধারণত কৃষকের নিজ ঘরে, বৈঠকখানায় বা যে কোনো চালা ঘরে ২-৩ মাস পর্যন্ত আলু সংরক্ষণ করা যায়। তবে সাময়িকভাবে এসব ঘরে সংরক্ষণের বিষয়ে কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করলে সংরক্ষিত আলুর অপচয় কম হয়। যে ঘরে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা ভালো এবং অক্সিজেনের অভাব ঘটে না সেখানে অহিমায়িত অবস্থায় আলু সংরক্ষণ করা যায়।


অহিমায়িত গুদামঘর নির্মাণ কৌশল
সম্প্রতি ‘কৃষি বিপণন অধিদপ্তর’ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পরীক্ষামূলকভাবে খাবার আলু সংরক্ষণের জন্য অহিমায়িত গুদাম নির্মাণ করেছে, যা বেশ কার্যকর। অল্প খরচে গুদামঘর বিশেষভাবে তৈরি করা যেতে পারে। ১০ মিটার (প্রায় ৩০ ফুট) দৈর্ঘ্য ও ৫ মিটার (প্রায় ১৫ ফুট) প্রস্থ এবং ৩ মিটার (প্রায় ৯ ফুট) উঁচু আকারের ছনের বা টিনের ঘরে মাটি থেকে ৪৫-৫০ সেমি. (প্রায় ১.৫ ফুট) উচ্চতায় শক্ত করে বাঁশের মাচা তৈরি করে ২ থেকে ২.৫ মিটার (প্রায় ৬-৮ ফুট) দূরে দূরে ছিদ্রযুক্ত টিনের চোঙা বা বাঁশের তৈরি চোঙা স্থাপন করার পরে মাচার ওপরে চোঙার চারদিকে আলু সংরক্ষণ করতে হবে। সংরক্ষণের আগে আলু বাছাই করতে হবে, যাতে অপরিপক্ব, পোকা খাওয়া ও কাটা আলু না থাকে। মাচার নিচের ফাঁকা জায়গা এবং চোঙার মধ্য দিয়ে সহজেই বাতাস চলাচল করতে পারবে। এতে আলু ভালো থাকে এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের কোনো অসুবিধা হয় না। গুদাম ঘরের নিচে স্যাঁতসেঁতে থাকতে পারবে না। সূর্যের আলো ও বৃষ্টির পানি যাতে ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বর্ণিত আকারের অহিমায়িত একটি গুদামঘরে ১০০-১৫০ টন আলু সাময়িকভাবে সংরক্ষণ করা যায়। অহিমায়িত গুদাম সম্ভব হলে পূর্ব-পশ্চিমে লম্বালম্বি করে নির্মাণ করলে দক্ষিণের বাতাস গুদামের সমস্ত অংশে প্রবাহিত হতে পারে। এতে সংরক্ষিত আলুর গুণাগুণ ভালো থাকে। বসতবাড়িতে আলু সংরক্ষণের জন্য প্রতিটি ১০ মিটার (প্রায় ৩০ ফুট) দৈর্ঘ্য  এবং ৫ মিটার (প্রায় ১৫ ফুট) প্রস্থ  ও ৩ মিটার (প্রায় ৯ ফুট) উচ্চতা আকারের বাঁশ, কাঠ, টিন, শন ইত্যাদি দ্বারা তৈরি ঘরের মেঝে পাকা করে এবং গ্যাস নির্গমনের ও বায়ু চলাচলের জন্য সুব্যবস্থা রেখে ঘর নির্মাণ করলে সর্বোচ্চ প্রায় এক লক্ষ পাঁচ হাজার টাকা খরচ হতে পারে।


ক্ষুদ্র ও মাঝারি আলুচাষিরা বাজারমূল্য বিশ্লেষণ করে লাভজনক সময়ে আলু বিক্রয় করে অধিক আয় নিশ্চিত করতে পারবে এবং স্বল্প খরচে এ ধরনের ঘর নির্মাণে অন্যা আলুচাষিরাও উদ্বুদ্ধ হবে। ফলে দেশের আলু সংরক্ষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং আলুর ক্ষতি হ্রাস পাবে। এভাবে আলু সংরক্ষণ করলে অপচয় রোধ হবে ও সারা বছর সংরক্ষণ করে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে আলু চাষিগণ আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারেন।

 

কৃষিবিদ মিজানুর রহমান১ কৃষিবিদ সাবিনা ইয়াসমিন২

১পরিচালক ২উপজেলা কৃষি অফিসার (এলআর), সংযুক্তঃ মোবা : ০১৬৮৮০৫৪৭৮৬, হর্টিকালচার উইং, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ি, ঢাকা

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon